কলকাতা, ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫: চিকিৎসা উৎকর্ষতা ও রোগীর আস্থার এক অনন্য যাত্রায়, মণিপাল হাসপাতাল, ই এম বাইপাস, ড. বিকাশ কাপুর – ক্লাস্টার ডিরেক্টর, অর্থোপেডিকস, মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাস এবং মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুর – এর নেতৃত্বে, সফলভাবে মাত্র দুই বছরেরও কম সময়ে ১০০০টি রোবোটিক টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট (TKR) সার্জারি সম্পূর্ণ করেছে। পূর্ব ভারতে এটি সবচেয়ে দ্রুততম এবং গোটা দেশের মধ্যেও অন্যতম দ্রুত সাফল্য হিসেবে স্বীকৃত।
এই ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন করতে, হাসপাতালটি আয়োজন করেছিল এক বিশেষ অনুষ্ঠান যেখানে রোগীরাই হয়ে উঠেছিলেন সন্ধ্যার আসল নায়ক। তারা নৃত্য পরিবেশনা, র্যাম্পে হাঁটা এবং ফিটনেস ডেমোনস্ট্রেশনের মাধ্যমে নতুন জীবনের উচ্ছ্বাস ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শ্রীমতী মালা রায়, কিংবদন্তি শিল্পী উষা উত্থুপ, খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর, কাঁথা শিল্পের পথিকৃৎ শ্যামলু দুধেজা ও মাল্লিকা ভার্মা, জুনেজা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ইন্ডিয়ান লেদার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট রমেশ জুনেজা, এবং শিল্পপতি দীপক গোয়েল (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, লেজার পাওয়ার অ্যান্ড ইনফ্রা প্রাইভেট লিমিটেড)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুরেকা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রদীপ সুরেকা, আম্বুজা নিওটিয়া গ্রুপের হর্ষবর্ধন নিওটিয়া, মণ্যবর গ্রুপের প্রতিনিধিত্বকারী অজয় মোদি, চাওম্যান ও ওউধ ১৫৯০-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাদিত্য চৌধুরী, বি. পি. পোদ্দার গ্রুপের চেয়ারম্যান অরুণ পোদ্দার, আইপিএস অফিসার অনুজ শর্মা-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। উল্লেখযোগ্যভাবে, এদের মধ্যে অনেকেই মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাসে ড. বিকাশ কাপুরের অধীনে রোবোটিক হাঁটু প্রতিস্থাপন করিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল একটি আন্তরিক আলাপচারিতা, যেখানে জনপ্রিয় আরজে অরবিন্দ ড. বিকাশ কাপুরকে নিয়ে রোবোটিক টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট-এর সাফল্য ও উন্নত অর্থোপেডিক যত্নের গুরুত্ব নিয়ে আলাপচারিতা করেন। প্রায় ৫০ জন রোগী, যারা ইতিমধ্যেই সার্জারি করিয়েছেন, সেখানে উপস্থিত থেকে তাদের নৃত্য, র্যাম্প ওয়াক এবং জিমের ফিটনেস রুটিনের মাধ্যমে জীবন ফিরে পাওয়ার আনন্দ প্রকাশ করেন। ঐতিহ্যবাহী ধুনুচি নাচ থেকে শুরু করে প্রাণবন্ত ফিটনেস প্রদর্শনী— সবই প্রমাণ করে যে রোবোটিক সার্জারি তাদের জীবনে নতুন স্বাধীনতা, চলাফেরার ক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। বার্তাটি ছিল স্পষ্ট—অর্থোপেডিকস ও জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির ক্ষেত্রে কলকাতা আর পিছিয়ে নেই।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. বিকাশ কাপুর বলেন,”মাত্র দুই বছরের কম সময়ে ১০০০ টি রোবোটিক হাঁটু প্রতিস্থাপন সম্পূর্ণ করা নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়, কিন্তু এর চেয়েও বড় আনন্দ হল প্রতিটি রোগীর গল্প। তারা দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন, স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে ভুগছিলেন। আজ রোবোটিক প্রযুক্তি মানব দক্ষতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে সম্মান, চলাফেরার স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাস। আমার কাছে সবচেয়ে বড় পুরস্কার হল রোগীদের আবার হাঁটতে দেখা, নাচতে দেখা, জিমে অনুশীলন করতে দেখা এবং জীবনের আনন্দে ফিরতে দেখা। এই সাফল্য আমাদের প্রতি রোগীদের আস্থা, আমাদের দলের নিবেদন এবং আধুনিক চিকিৎসার রূপান্তরমূলক শক্তির প্রতিফলন।”
এই সাফল্য সম্পর্কে মত প্রকাশ করে মণিপাল হাসপাতাল (ইস্ট)-এর রিজিওনাল সিওও ড. অয়নাভ দেবগুপ্ত বলেন,”মণিপাল হাসপাতালের মূল লক্ষ্য সবসময়ই পূর্ব ভারতের মানুষের কাছে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। মাত্র একটি ইউনিটেই দুই বছরের কম সময়ে ১০০০ টি রোবোটিক হাঁটু প্রতিস্থাপন আমাদের ক্লিনিকাল এক্সিলেন্স, উদ্ভাবন ও রোগীকেন্দ্রিক যত্নের প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে। রোবোটিক সার্জারি রোগীদের জন্য দেয় নির্ভুলতা, দ্রুত আরোগ্য, কম ব্যথা এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নত ফলাফল। রোগীরা দ্রুত জীবনের ছন্দে ফিরতে পারেন। এই অর্জন আমাদের উন্নত অর্থোপেডিকস সেন্টার হিসেবে স্থানকে আরও দৃঢ় করেছে, তবে আসল সাফল্যের মাপকাঠি রয়ে গেছে আমাদের রোগীদের অনুপ্রেরণামূলক জীবনকথা।”