(সশ্রদ্ধ নিবেদন)
✍️পদ্মিনী দত্ত শর্মা
Dedicated to Tagore, the immortal bard on his birth centenary….
শুনে শুনে এক ই কথা মাথা ধরে যায় যে
সেকেলের নাকি সবই ভালো ছিলো
একেলের সব ই বড় মন্দ বটে
তুমি ছাড়া এদের কে বোঝাই বা কি ভাবে?
অজ্ঞতা আবার হলেম তোমার দারস্ত
ভুল ত্রুটি মার্জনা কোরো, ক্ষমা প্রার্থনীয়
আমার প্রনাম নিও।
সেকেলের মেয়েদের নাকি একটা আব্রু ছিলো
স্বামী কে ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করতো
শশুর শাশুড়ির সেবা করে উল্টে দিত
নিঃশব্দে ফি বছর সন্তান প্রসব করতো
না ছিলো অভিযোগ না অনাচার
প্রতিবাদ তো সপ্নের ও অলীখ ছিল
তাহলে কি তখনকার সব নারীরা মোমের পুতুল
কিম্বা কাটপুতলি ছিলো?
এখনকার মেয়ে বৌরা নাকি বড্ড বেনিয়মী
বেহিসেবি ও বৈকি
শুধু শপিং করে মলে মলে আর যায় পার্লার এ
কথায় কথায় তর্ক করে, যুক্তি দেয়
স্বামী কে বশ করে ৪৯৮ এর হুমকি দেয়
ঘরের কাজকর্ম সব রোবট এই বোধ করি করে
তাছাড়া সবার নাকি একটা দুটো করে চলোনদার ও থাকে
চলতি কথায় যাকে আমরা বয়ফ্রেন্ড কিম্বা লাভার বলেই ডাকি
জামা কাপড় ও নাম মাত্র পরে
শালীনতা প্রায় নেই বললেই চলে…
এখন নাকি ঘরে ঘরে পরিকিয়া প্রেম
সেকেলে নাকি এমন অধর্ম ভাবাই যেতনা
ভাসুর কে দেখে নাকি ঘোমটা দিত ভাত্র বৌ
মরি মরি
কিন্তু কেও মানবেনা আসল সত্তি
ঘোমটার নিচে যে অহরহ কত খেমটা নাচ হত
ভাবলেই গা ঘিন ঘিন করে !
এবার না হয় তত্ত্ব কোথায় ফিরে আসি
কবি তুমি ছাড়া তো কোনো গতি নাই দেখি
তাই বাধ্য হয়েই তোমায় নিয়ে টানাটানি করি
তোমার নভেল গুলো পড়া আছে বৈকি!
মা মাসিদের সুধই আচ্ছা বল তো দেখি
তখনকার দিনে বেধবারা কেন খালি গায়ে থাকত?
উত্তপ্ত করে দিয়ে সাধু সাজা চলতো
এই বিনোদিনীর কথাই না হয় ধরো
কি বলে তার চোখের বালি কে ঠকালো
আশালতা বেচারী রাগে দুঃখে বাপির বাড়ি গেল
বিনোদিনী দিশে মেশে না পেয়ে
মহেন্দ্র কে ছেড়ে বেহারী বেচারী কে
নতুন ফাঁদে ফেলার ফিকির করলো
এ তো আজকের কথা নয়
রবি গুরু লিখেছিলেন তাঁর সময়ে
বিনোদিনী কি তাহলে সতী ছিলো?
লালসা, কামনা এগুলো স্বাভাবিক ইন্দ্রিয়
কোনো সময় বিশেষের ধার ধরেনা
স্বামী নেই বলে শরীর তো আর মানবেনা
ঠিক যেমন উদর অহরহ করে নিজের ভাবনা।…
চারুলতার কথাই ধরা যাক না কেন
ভূপতি না হয় তার প্রেস নিয়ে ডুবে থাকত
তাবলে সে কিনা অমল প্রতি আকৃষ্ট হলো?
এটা বাভিচার না তো কি বলো?
১৯০৭ সালে নিখিলেশের অর্ধাঙ্গিনী বিমলা
স্বামী কে ছেড়ে ধলে পড়ল সন্দীপ এর দিকে
সঁপে দিল মন, প্রাণ, গহনা, লজ্জা
তবু শুনতে হয় দিনান্তে একবার
আগের কার মেয়েরা সব সতিলক্ষী ছিল
পরকীয়া প্রেম নাকি তখন নিষিদ্ধ ছিল
শুনলে গা জ্বলে যায় যেন…
অমিত রে যে লাবন্য আর কেতকী কে নিয়ে পিং পং খেললো
কই তাতে তো কারুর ভ্রুকুটি না নড়লো
একজন নাকি নিত্য ঘরা আর একজন খোলা আকাশ
এখনকার ছেলে মেয়েদের দু তিন জন বন্ধু থাকলেই
বলা হয় তাদের কুলাঙ্গার
অযোক্তিক কি না সবাই বোলো?
বড় মনের মানুষরা বাসতেই পারে ভালো একাধিক
তখন যদি দোষের ছিল না আজকেই বা হবে কেন?
আরো কত উদাহরণ দেব?
একাল অকাল বলে কোনো কথা হয় না যেন
রিরংসা, আবেগ আদিম ও অন্ত
বহুগামিতা পুরাতন সত্য যেন
নারী পুরুষ নির্বিশেষে
ভোগবিলাস সবার ই কাম্য
দেহ পুড়ে হবে ছাই
কিন্তু ক্ষনিকের পিপাসা মারাত্মক যেনো।
রমেশ ভালবাসল হেমনলিনি কে
বিয়ে করতে বাধ্য হলো সুশীলা কে
ঘর বাঁধলো কমলার সাথে
ওদিকে হেম বাধা পড়ল কমলার বরের সাথে
কিন্তু সবাই বলবে আজকালকার ছেলেরাই এমন বটে
রোজ নিশীথে নিত্য নতুন সঙ্গী খোঁজে
নাহলে নৌকাডুবি হবেই বা কেন?
মৃনালিনী আর কাদম্বরী
দুজনেই অসামান্য, অতুলনীয়া নারী
দুজনেই কবির অতি প্রিয়
তবু কিসের এত দন্ধ
মন টা তো খোলা আকাশ
বাক্স বন্দী করে যে বেঁধে রাখা দায়
ভালবাসা যে আসে নিঃশব্দে
ছন্দপতন ও যে হয় নিভৃতে
এখানে কি কারুর চরিত্র স্খলন করা যায়
অকারণ দোষী করা বুঝি বেমানান নয়?
কুমুদিনীর ব্যথা, মাধুসুধনের যাতনা
নতুন তো কিছু নয়
ঘরে ঘরে চলে মেরিটাল রেপ রাতের অন্ধকারে
বেশির ভাগ এ থেকে পরে চাপা
লোক লজ্জার আড়ালে!