নিজস্ব প্রতিবেদক:দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা অনিয়ম, দুর্নীতি, তথ্য গোপন ও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে সরব হয়েছে ‘বন্ধন এমপ্লয়ীজ্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ এর সদস্যরা। ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার, বঙ্গভাষী মহাসভা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে, মহাবোধি সোসাইটি হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়।

২০০৮ সালে ‘বন্ধন কোন্নগর’ ও ‘বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড’ – এর কর্তাব্যক্তিদের কথায় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরার ৩০৭৬ জন কর্মী শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করেন। যে সব কর্মী শেয়ারে বিনিয়োগ করেন তাঁদের নিয়ে কয়েক মাস পরে একটি ট্রাস্ট গঠন করা হয়। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হন চন্দ্র শেখর ঘোষ। যদিও সেই সময় ট্রাস্টের নাম, পরিচালন সমিতিতে কারা কারা আছেন ও বিনিয়োগের টাকা কোথায় লগ্নী করা হয়েছে তা শেয়ার হোল্ডারদের জানানো হয় নি।
দশ বছর পর এই শেয়ারের লভ্যাংশ পাবার কথা থাকলেও কর্মীরা তা পান নি। পরে ২০১৯, ২০ ও ২১ সালে কিছু শেয়ার হোল্ডারকে লভ্যাংশ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের আগে ট্রাস্টের যে সদস্যরা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন বা ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের বঞ্চিত করেছে পরিচালন সমিতি।

২০২০ সালে কর্মীরা জানতে পারেন, তাঁদের নিয়ে যে ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছে, তার নাম ‘বন্ধন এমপ্লয়ীজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’।
সময়ে সময়ে বন্ধন এমপ্লয়ীজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তার পদে বদল হয়েছে । কিন্তু সে সম্পর্কে ট্রাস্টের সদস্যদের কিছুই জানানো হয় না। এমনকি কোন বার্ষিক সাধারণ সভাও আজ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় নি।

ট্রাস্টের সদস্যদের চাপে ২০২২ সালে তৎকালীন চেয়ারম্যান কল্যাণ কুন্ডু জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রাস্টের অর্থ ইকুইটি শেয়ারের মাধ্যমে বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডে লগ্নী করা হয়েছে। পরে এই সংস্থা নাম পাল্টে বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড হয়। ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স পাওয়ার পর বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড তার ফান্ড বন্ধন ফিনান্সিয়াল হোল্ডিং লিমিটেডে বিনিয়োগ করে। পরে বন্ধন ফিনান্সিয়াল হোল্ডিং লিমিটেড, বন্ধন ব্যাঙ্কের ইকুইটি শেয়ারে সেই অর্থ বিনিয়োগ করে। অর্থাৎ বন্ধন এমপ্লয়ীজ্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের টাকা পরোক্ষভাবে বন্ধন ব্যাঙ্কে বিনিয়োগ করা আছে। দশ বছর পর শেয়ারের লভ্যাংশের টাকা ট্রাস্টের সদস্যদের দেওয়া ছাড়াও কিছু অর্থ অন্যান্য কয়েকটা সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে।

ট্রাস্টের সদস্যরা জানতে চান কোথায় কোথায় কতো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ? গত দশ বছরে সেই টাকার কত লভ্যাংশ পাওয়া গেছে ? বর্তমানে ট্রাস্টের মোট অর্থের পরিমাণ কতো ? সদস্যদের যে লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে তা কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে ?
সাংবাদিক বৈঠকে বন্ধন এমপ্লয়ীজ্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সদস্যরা এইসব দুর্নীতি দূর করা ও তাঁদের ন্যায্য ৬,৭১০ কোটি টাকা মিটিয়ে দেবার দাবি জানিয়েছেন।

সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বন্ধন এমপ্লয়ীজ্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সদস্য ও বঙ্গভাষী মহাসভা ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি শুক্লা বল, বন্ধন এমপ্লয়ীজ্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সদস্য সুব্রত বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ দাস, আবরারুল আলম কাজী প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *