IMG-20240729-WA0022

আনন্দদিন প্রতিনিধি: জীবনের সবেতেই রয়েছে ছন্দ। তবুও নাচ-গান-কবিতা নাটকে নিজেদের চলার পথে নাচের ছন্দকে নিয়ে ২৮ বছর অতিক্রম করল ‘নৃতাল ছন্দ ডান্স সেন্টার’।

তাদের এই ২৮ বছর উপলক্ষে এক বার্ষিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল উত্তর কলকাতার পাইকপাড়ার মোহিত মৈত্র মঞ্চে। নৃত্য শিল্পী ও জি বাংলার বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সৌরভ চন্দের পরিচালনায় নৃতাল ছন্দ ডান্স সেন্টার আজ সকলের কাছে অন্যতম স্থান পেয়েছে এবং এই বাতসরিক আঠাশে-এ-আঠাশ’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী ও বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী ইন্দ্রাণী দত্ত, মালবিকা সেন, সোনালী চৌধুরী, ব্রততী চৌধুরী, আরও অনেক গুনীজনেরা। সন্ধ্যা ৫টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, রাজ্যের দমকল মন্ত্রী মাননীয় সুজিত বসু এবং বিধায়ক মদন মিত্র।


নৃতাল ছন্দের এই আঠাশে-এ-আঠাশ’ নামকরণের এক অর্থ রয়েছে। আজ ২৮ জুলাই তারা ২৮ বছর অতিক্রম করল। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী সোনালী চৌধুরীও অতিথি হিসাবে নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে নৃতাল ছন্দের পরিচালক সৌরভ চন্দ বলেন, “এই দিনটি আমার কাছে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য এবং আমার নৃত্য একাডেমি, নৃতাল ছন্দের জন্য একটি বিশেষ দিন। আমরা আজ ২৮তম বছরে পদার্পণ করেছি। এই দীর্ঘ সফরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সাথে নিজেকে যুক্ত রাখতে পেরেছি এবং অনেক কিছু শেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আজ আমরা একাডেমির জন্য নতুন লোগোও উন্মোচন করেছি। শিল্প মানুষের জীবনকে অনেকটা বদলে দিতে পারে, এই নাচের মাধ্যমে এই একাডেমীতেও অনেকের জীবনকে বদলে দিতে পেরেছে। নাচ শেখার ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধা নেই। আমার এমন ছাত্র আছে যারা চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে এবং তারপর আনন্দ, প্রাচুর্য এবং সৃজনশীলতা প্রকাশ করার জন্য নিজেকে মেলে ধরেছে। আমার লক্ষ্য ছাত্র-ছাত্রীদের নৃত্য শিখিয়ে অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং তাদের জীবন পরিবর্তন করা।”

নৃতালের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয় শিক্ষার্থীদের রবীন্দ্রসঙ্গীতের নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে “ধ্বনিলো আহবান মধুরো গম্ভীররো প্রভাতো অম্বরো মাঝে।” তারপর “মীরা বাঈ” নামক মনোমুগ্ধকর নৃত্যনাট্য দর্শক ও অতিথিদের মুগ্ধ করেছে। একেরপর এক নৃতাল জনপ্রিয় হিন্দি, বাংলা আধুনিক গান এবং পাশ্চাত্য গানে মুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে এই ডান্স একাডেমির ছাত্রছাত্রীরা। এছাড়া শাস্ত্রীয় নৃত্য এবং ফ্রিস্টাইল সহ বিভিন্ন ঘরানার নৃত্য পরিবেশন করে তারা। এছাড়া “দেবী চৌধুরানী” নৃত্য নাটক পরিবেশন করে অভিনেত্রী সোনালী চৌধুরী। তার মুখ্য চরিত্র নৃত্যের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিল এবং “শ্রী চৈতন্য,” নৃত্য নাটকে তিনি শ্রী চৈতন্য চলে যাওয়ার সময় পরিত্যাগের আবেগকে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। বিষ্ণুপ্রিয়া যখন শোকগ্রস্ত হয়ে তপস্বী গ্রহণ করলেন সেই আবগে মেতে উঠেছিল সমস্ত দর্শকরাও।
এই সন্ধ্যার আরেকটি প্রধান আকর্ষণ ছিল কোরিওগ্রাফার সৌরভ চন্দের নির্দেশনায় বারোজন অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ নাগরিকের নৃত্য পরিবেশনা, এই সব প্রবীন শিল্পীদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। সৌরভ চন্দ নাচের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে একটি প্রাণবন্ত চেতনা জাগিয়েছিলেন এবং তাদের জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিলেন। এর পর
জয়-হো গান-এর নৃত্য আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *